রসায়নবিদ স্যার হামফ্রি ডেভি | কবি, দার্শনিক, আবিষ্কারক এবং উদ্ভাবক

হামফ্রি ডেভি (Humphrey Davy): তোমরা নিশ্চয় জানো যে, কয়লা পাওয়া যায় মাটির তলার খনি থেকে। সেই খনির শ্রমিকেরা দেয়াল থেকে কেটে কেটে কয়লা উপরে তোলে। 

মাটির তলায় অন্ধকার। সেই অন্ধকারে কাজের সুবিধের জন্যে যে আলো জ্বালা হতো তাতে অনেক সময় আগুন জ্বলে উঠত আর মারা যেত অনেক শ্রমিক। 

Advertisements

মিথেন নামে একরকম গ্যাস তাপ পেলে জ্বলে উঠত বলেই এসব দুর্ঘটনা ঘটত। শেষে একদিন এক ইংরেজ বিজ্ঞানী এমন একরকম বাতি তৈরি করলেন যাতে খনির অন্ধকারও দূর হবে, অথচ আগুনও জ্বলে উঠবে না। 

এই বিজ্ঞানীর নাম স্যার হামফ্রি ডেভি (Sir Humphry Davy)


হামফ্রি ডেভি (Humphrey Davy)

হামফ্রি ডেভি (Humphrey Davy)
হামফ্রি ডেভি

জন্ম

Advertisements

জন্ম ১৭ ডিসেম্বর ১৭৭৮

পেনজ্যান্স,
কর্নওয়াল, ইংল্যান্ড

মৃত্যু

মৃত্যু
২৯ মে ১৮২৯(বয়স ৫০) 
জেনেভা,
সুইজারল্যান্ড

বিখ্যাত
হওয়ার কারণ

ইলেক্ট্রোলাইসিস,
অ্যালুমিনিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, স্ট্রন্টিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,
বেরিয়াম, বোরন, ডেভি ল্যাম্প, বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

স্যার হামফ্রি ডেভির জন্ম ইংল্যান্ডের কর্নওয়াল নামে এক জায়গায় ১৭৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর। স্কুলের লেখাপড়ার শেষে তাঁর চিকিৎসক হবার ইচ্ছে ছিল। 

বাবার মৃত্যুর পরে এক চিকিৎসকের কাছে ডাক্তারির কাজ শিখতে শুরু করেন ডেভি কবিতাও ভালোবাসতেন তিনি। 

কিন্তু কবিতা বা চিকিৎসা কোনোটাই হল না। তিনি শুরু করলেন বিজ্ঞান চর্চা।

১৭৯৭ সালে গিলবার্ট নামে এক গবেষকের সঙ্গে আলাপ হল। গিলবার্ট তাঁকে নিয়ে যান এক চমৎকার গবেষণাগারে। 

এমন গবেষণাগার ডেভি কখনো দেখেননি। এখানেই ডেভি শুরু করলেন তাপ, আলো আর বিদ্যুৎ নিয়ে চর্চা। তাছাড়া রসায়ন নিয়েও তিনি গবেষণা করতেন। 

পরে তিনি নিজেই একটা গবেষণাগার তৈরি করে ফেললেন। এসময় রসায়ন নিয়েও তিনি অনেক লেখাপড়া করতেন। 

নানারকম গ্যাস নিয়ে পড়াশুনো আর পরীক্ষা করতে করতেই একদিন তৈরি করলেন খনিতে কাজ করার বাতি। তাকে বলা হয় ‘নিরাপদ বাতি’।

মাটির নিচে খনিতে কাজ করার সময় শ্রমিকেরা যে বাতি জ্বালত তা থেকে তাপ বেরিয়ে বাতির বাইরের গ্যাসের সঙ্গে মিশলেই আগুন জ্বলে যেত। 

ডেভি এমন এক বাতি তৈরি করলেন যা আলো দেবে কিন্তু তার তাপ মিথেন গ্যাসের সঙ্গে মেশার আগেই কমে যাবে। তখন আর আগুন জ্বলে দুর্ঘটনা ঘটবে না। 

ডেভি এই বাতি তৈরি করেন ১৮১৫ সালে। আর এর ফলে হাজার হাজার শ্রমিকের প্রাণ বেঁচে যায়।

স্যার হামফ্রি ডেভির সবচাইতে বিখ্যাত আবিষ্কার এটাই । তবে তিনি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। 


আরও পড়ুন.. 

  1. আর্কিমিডিস (Archimedes)
  2. জর্জ স্টিভেনসন (George Stevenson)
  3. গ্যালিলিও গ্যালিলেই (Galileo Galilei)

তিনি এমন একরকম গ্যাস আবিষ্কার করেছিলেন যা অল্প সময়ের জন্যে মানুষের শরীরের কোনো অংশকে অসাড় করে দেয়। 

আবার পুরোপুরি অজ্ঞানও করে দিতে পারে এই গ্যাস। অপারেশন করা বা দাঁত তোলার জন্য এই গ্যাস ব্যবহার করতেন চিকিৎসকরা। 

এই গ্যাস খুব অল্প পরিমাণে নিশ্বাসের সঙ্গে ভিতরে টেনে নিলে হাসি পায়। তাই এর আর এক নাম লাফিং গ্যাস বা হাসানো গ্যাস।

গবেষণার জন্য ইংরেজ সরকার তাঁকে ‘স্যার’ উপাধি দেন। তিনি লন্ডনের রয়াল সোসাইটির সভাপতি হয়েছিলেন। 

আরও নানা সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। তখনকার দিনের তরুণ গবেষক ছাত্র ও বিজ্ঞানীদের তিনি নানাভাবে উৎসাহ দিতেন, সাহায্য করতেন। 

১৮২৯ সালের ২৯ মে সুইজাল্যান্ডের জেনিভা শহরে স্যার হামফ্রি ডেভির মৃত্যু হয়।


Source


  1. https://www.sciencehistory.org/historical-profile/humphry-davy
  2. https://www.bbc.co.uk/history/historic_figures/davy_humphrey.shtml
  3. https://www.rigb.org/our-history/people/d/humphry-davy
  4. https://royalsocietypublishing.org/doi/10.1098/rsnr.2017.0055
  5. https://nationalmaglab.org/education/magnet-academy/history-of-electricity-magnetism/pioneers/humphry-davy
হামফ্রি ডেভি (Humphrey Davy)

Advertisements

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top