পৃথিবীর সব দেশের নারীদের কিছু বিশেষ ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি অত্যান্ত বেশি। এর মধ্যে স্তন ক্যানসার, পায়ুপথের ক্যানসার, জরায়ুমুখের ক্যানসার, মুখের ক্যানসার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সচেতন হলে এসব ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানাে সম্ভব।
এ কারণেই ক্যানসার প্রতিরােধ ও প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের ওপর জোর দিতে হবে বেশি। তবে এর চেয়ে বেশি জরুরি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কায়িক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম। কারণ, ক্যানসার হওয়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরােধ জরুরি বেশি।
যেসব ক্যান্সারে নারীরা বেশি আক্রান্ত হন । The cancers that affect women.
স্তন ক্যানসার : Breast cancer
চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রতিনিয়ত উন্নতির ফলে এখন স্তন ক্যানসার নিরাময় সম্ভব হয়ে উঠেছে। তবে নিরাময়ের প্রথম শর্ত তা ধরা পড়তে হবে যথাসময়ে। পরিবারে কারও স্তন ক্যানসারের প্রাচীন ইতিহাস থাকলে বা মা আক্রান্ত থাকলে আরও সচেতন হতে হবে। সঠিক সময়ে বিয়ে, সন্তান নেওয়া, সন্তানকে নিয়মিত স্তন্যদান ইত্যাদিও জরুরি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে স্ক্রিনিং ম্যামােগ্রাম ছাড়াও নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করতে হবে নিয়মিত। স্তনে যেকোনাে পরিবর্তন, গােটা, নিঃসরণ, চাকা মনে হলে পরীক্ষা করতে হবে।
প্রতি মাসে মাসিক শুরু হওয়ার পর প্রথম ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা করুন। কারও মাসিক নিয়মিত না হলে ক্যালেন্ডারের
পাতায় দাগ কেটে প্রতি মাসে একবার পরীক্ষা করবেন। গর্ভবতী ও সন্তানকে বুকের দুধ দেওয়া মায়েরাও পরীক্ষা করবেন।
জরায়ুমুখের ক্যানসার : Cervical cancer
কম বয়সে বিয়ে, বেশি সন্তানের জন্মদান, ঠিকমতাে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা, বহুবিবাহ এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এটি প্রতিরােধ করতে তাই জনসচেতনতা এবং সবার অংশগ্রহণ জরুরি।
![]() |
জরায়ুমুখের ক্যানসার : Cervical cancer |
ধূমপান পরিহার করতে হবে, জর্দা–সাদা পাতা–গুল বর্জন করতে হবে। এ ছাড়া পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে, সুশৃংখল জীবনযাপন ও সামাজিক অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
নারীদের নিয়মিত পেপস স্মেয়ার পরীক্ষাও করা প্রয়ােজন। এতে রােগ আগেভাগে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এখন এই রােগ প্রতিরােধে টিকাও আছে।
পায়ুপথের ক্যানসার : Anal cancer
এই ক্যানসার পুরুষদের বেশি হয়। তবে নারীদের ক্ষেত্রে সংকোচ আর লজ্জার কারণে এই ক্যানসার ধরা পড়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে।
![]() |
পায়ুপথের ক্যানসার : Anal cancer |
প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে স্তন ক্যানসারের মতাে পায়ুপথের ক্যানসারও নিরাময়যােগ্য।
পায়ুপথে যদি তাজা রক্ত না গিয়ে মরা রক্ত, আমযুক্ত রক্ত, পেটে মােচড় দিয়ে অথবা কালাে দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা হয়, তাহলে সচেতন হতে হবে।
পায়ুপথ দিয়ে যদি আচানক বা দীর্ঘদিন ব্যথাহীন রক্তপাত হয় তাহলে কিছুতেই অবহেলা করা চলবে না। মনে রাখবেন, বেশির ভাগ ক্যানসারেই আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যথা থাকে না।
মুখের ক্যানসার : Oral cancer
![]() |
মুখের ক্যানসার : Oral cancer |
অনেক নারীই নিয়মিত পান, গুল, তামাক, জর্দা জাতীয় অনেক নেশাজাত দ্রব্য সেবন করেন। এতে মহিলাদের মুখ ও মুখগহ্বরের ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষ ধূমপানেও ঝুঁকি বাড়ে। এসব কারণে ফুসফুসের ক্যানসার ছাড়াও স্তন এবং অন্যান্য ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। মুখে ঘা হলে এবং তা দীর্ঘদিনে না সারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Conclusion:
Last line: যেসব ক্যান্সারে নারীরা বেশি আক্রান্ত হন । The cancers that affect women.