ব্যর্থতা সব মানুষের জীবনের আলোকিত একটি দিক। কিন্তু, যারা ব্যর্থতায় পুরোদমে দাঁড়াতে না পারে তারা বিজয়ী হতে পারে না। একজন ব্যর্থ উদ্যেক্তা নিজের ব্যর্থতাকে সফলতার মুল চাবি হিসেবে ব্যবহার করে। ব্যর্থতা মানুষের সাফল্যের বাধা নয়, বরং ব্যর্থতা মানুষের সফলতার সঙ্গি, যে কিনা কর্মপন্থার সঠিক-ভুল দিক প্রকাশিত করে।
ব্যর্থতায় হাল ছেড়ো না বন্ধু– আমি উদ্যেক্তা হতে চাই (২য় পর্ব) Be an entrepreneur!
প্রথম পর্ব পড়া না থাকলে এখান থেকে দেখে নিন।
ব্যর্থতার কারণ খোঁজা কেন জরুরী ? আমি উদ্যেক্তা হতে চাই (১ম পর্ব) Be an entrepreneur!
পুর্বের মতো আজকেও আমি জ্যক মার একটি উক্তি দিয়ে শুরু করব।
জ্যাকের মতে, হাল ছেড়ে দেওয়া সফলতার এক মারাত্মক শত্রু। জ্যাকের বিশাল সম্পত্তি থেকেও আমাদেরকে অধিক মােহিত করে রাখে তাঁর অস্বাভাবিক ধৈর্যশক্তি।
তিনি যে কথাটির ওপর গুরুত্ব দিতে ভালােবাসতেন তা হলাে, আজ কঠিন। আগামীকাল হবে আরও কঠিন। কিন্তু পরশু হবে চমৎকার। কিন্তু অধিকাংশ লােকের প্রচেষ্টা আগামীকালই নিঃশেষ হয়ে যায়।
‘চ্যালেঞ্জ নেওয়া ব্যবসা শুরু করার একটি অংশ। একজন এন্ট্রাপ্রেনিউর হিসেবে সে-ই বিজয়ী হয় যে সমস্যার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পারে। আমি আমার সলাে-এন্ট্রাপ্রেনিউয়ারেল জার্নি থেকে সরাসরি এ জ্ঞান অর্জন করেছি।’ – জ্যাক
জ্যাকের ধৈর্য এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদিতার দর্শনের উৎপত্তি, তাঁর চরমভাবে প্রত্যাখ্যাত হওয়া এবং হতাশাবােধ থেকে।
জ্যাক কোনাে স্ট্রেইট-এ স্টুডেন্ট ছিলেন না। আসলে তিনি মিডল স্কুলে ভর্তি হওয়ার পথে ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন। প্রাইমারি টেস্টে দুবার, মিডল স্কুল টেস্টে তিনবার এবং কলেজের ভর্তি-পরীক্ষায় তিনবার ফেল করেও তিনি হাল ছেড়ে দেননি।
হ্যাঁ, আমাদের অনেকে স্কুল থেকে একইরকম কারণে ড্রপআউট হয়ে পড়েন। আশ্চর্যের কিছু নয়, জ্যাক মহান ব্যক্তিদের মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন না যিনি একাডেমিক স্তরে অবিরাম যুদ্ধ করে গেছেন। উইনস্টন চার্চিল, আইনস্টাইন এবং আব্রাহাম লিংকন একই যুদ্ধ করে গেছেন।
যখন জ্যাক আলিবাবা এবং আলিপে সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নেন, তখনকার সময়ের সম্মানিত বিজনেসম্যান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা বলেছিলেন এ কাজে সফল হওয়ার সম্ভাবনা জিরাে।
এতসব নেগেটিভ ঘটনায় দগ্ধ না হয়ে তিনি তার ভেতরের পজিটিভিটিকে কাজে লাগালেন এবং মনের মধ্যে থাকা পরিকল্পনা ধরে থাকলেন। ফলস্বরূপ আলিবাবা এবং আলিপে টিকে গেল । বর্তমানে আলিপে-এর ৪০০ মিলিয়ন রেজিস্টার্ড ব্যবহারকারী রয়েছেন যারা দিনে ১৭৫ মিলিয়ন বার লেনদেন করে থাকেন ।
সংখ্যাটি আমেরিকার জনসংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে! জ্যাক যা-কিছু করেছেন তার ভিত্তি ছিল পজিটিভ স্পিরিট। এটি আলিবাবার চমৎকার কাজের পরিবেশ ও উচ্চ কর্মীসন্তুষ্টি রেটিং থাকার একটি কারণ।
দৃঢ়তা, অনমনীয়তা এবং ধৈর্য্য : Perseverance, rigidity and patience
তিনটি সরল শব্দ জ্যাক তাঁর জীবনের প্রথম দিকে বলতে থাকতেন—You’re no Good!
এমনকি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর, তিনি প্রায় ত্রিশটি চাকরি থেকে প্রত্যাখ্যাত হােন। এমনকি একজন পুলিশ অফিসার হওয়ার জন্য আবেদন করেও তিনি প্রত্যাখ্যাত হন।
এতসব থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েও তিনি আশাবাদী থেকে গেলেন। এবং এতেই তিনি নিজের এন্টারপ্রাইজ গড়ে তােলার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর প্রিয় মুভি ‘ফরেস্ট গাম্প’ দেখে তিনি নিজের সাম্রাজ্যের পেছনে দৌড়াবার সাহস পেয়ে যান।
প্রতিনিয়ত শিখতে থাকা : Keep learning nonstop
মা বলতেন, আমি গণিতে ভালাে না, কখনাে ম্যানেজমেন্ট পড়িনি, এবং এখনও অ্যাকাউন্টিং রিপাের্ট পড়তে পারি না। -জ্যাক মা
জ্যাক ম্যা একবার তার ছেলেকে বলেছিলেন, “তােমাকে ক্লাশে টপ স্টুডেন্ট হতে হবে এমন না, মাঝামাঝি মানের স্টুডেন্ট হতে পারলেই ফাইন, যতক্ষণ পর্যন্ত তােমার গ্রেড খুব খারাপ না হয়। অবসর সময়ে যত পারাে অন্যকিছু শেখার চেষ্টা করে যাও।’
গণিতে খারাপ হওয়া এক বিষয় এবং আর ম্যাথ পরীক্ষায় ১২০ পয়েন্টের মধ্যে ১ পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারটি অন্য বিষয়। চাইনিজ মিডিয়া ২০১৪ সালে এই ৪৯ বছর বয়স্ক জ্যাককে ফ্রডস্টার, পাগল এবং বাতুলতাপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে যেত।
কিন্তু পরিশেষে তাঁর নিজের ই-কমার্স কোম্পানি (যা আমাজন ও eBay-এর সম্মিলিত সাইজের থেকে বড়াে ব্যবসা করছে) গড়ে তুলতে কারও সম্মতির প্রতি তিনি যেমন কর্ণপাত করেননি, তেমনি তার গণিতেও ভালাে করতে হয়নি।
Conclusion:
সিলিকন ভ্যালির এই ইন্ডাস্ট্রি ক্যাপ্টেন, যেমন : বিল গেটস, স্টিভ জবস এবং অন্যান্য বিখ্যাত টেক-আইকনদের মতাে জ্যাকের কম্পিউটার সায়েন্স বা আইটিতে কোনাে ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল না।
আরও বেশি অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল যে, তিনি একজন টিনএজার হওয়া পর্যন্ত কম্পিউটার শব্দটিও শােনেননি! ১৯৯৪ সালে একজন বিজনেস ইন্টারপ্রিটার হিসেবে আমেরিকা ভ্রমণের সময়ই তিনি ইন্টারনেটের অস্তিত্ব টের পান।
ধন্যবাদ সবাইকে ২য় পর্ব পড়ার জন্য।
প্রত্যাখ্যান ব্যর্থতা নয় – আমি উদ্যেক্তা হতে চাই (৩য় পর্ব) Be an entrepreneur!
Last Line: ব্যর্থতায় হাল ছেড়ো না বন্ধু- আমি উদ্যেক্তা হতে চাই (২য় পর্ব) Be an entrepreneur!