বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস | বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়া দমনে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য

ম্যালেরিয়া রোগ এর নাম তোমরা সবাই জানো। একসময় এই রোগে নানা দেশের লাখ লাখ লোক মারা গেছে। পরে এই রোগ আস্তে আস্তে কমে যায়। অনেক দেশে এখন ম্যালেরিয়া একেবারেই নেই। 

তবে আমাদের দেশে অবশ্য আবার ম্যালেরিয়া রোগ ঘুরে এসেছে। এই ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু আবিষ্কার করে বিখ্যাত হয়েছেন বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস (Ronald Ross)

Advertisements


রোনাল্ড রস (Ronald Ross)

বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস (Ronald Ross)
বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস (Ronald Ross)

পরিচয়

Advertisements

জন্ম 13 May 1857

মৃত্যু 16 September 1932 (aged 75)

London, UK


জাতীয়তা ব্রিটিশ

মাতৃশিক্ষায়তন St Bartholomew’s Hospital Medical College
Society of Apothecaries

পিরিচিতির কারণ ম্যালেরিয়া জীবানু মশা দ্বারা সংক্রামিত হয় আবিষ্কার

স্ত্রী
রোজা বেসি ব্লক্সাম ( 1889)​

পুরস্কার

এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের থেরাপিউটিকসের জন্য ক্যামেরন পুরস্কার (1901)
FRS (1901)[1]
ফিজিওলজি বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার (1902)
আলবার্ট মেডেল (1923)
ম্যানসন মেডেল (1929)


বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন

ক্ষেত্র Medicine

প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতাল, কলকাতা

লিভারপুল স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন কিংস কলেজ হাসপাতাল

ব্রিটিশ যুদ্ধ অফিস, পেনশন এবং জাতীয় বীমা মন্ত্রণালয

ক্রান্তীয় রোগের জন্য রস ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতাল

একসময় মানুষের ধারণা ছিল যে, দূষিত বাতাস থেকেই ম্যালেরিয়া রোগ হয়। ম্যালেরিয়া কথাটার মানে ‘দূষিত বাতাস’। পরে জানা গেছে, এ রোগ মোটেই দূষিত বাতাস থেকে হয় না। 

কীভাবে এই রোগ হয় তা ঠিক ঠিক জানার আগেই অবশ্য লোকে জেনে গিয়েছিল যে সিনকোনা নামে একরকম গাছের ছালের রস রোগীকে খাওয়ালে এই রোগ সেরে যায়। পরে এই সিনকোনা গাছ থেকেই কুইনিন নামে ম্যালেরিয়ার ওষুধ তৈরি হয়েছে।

কীভাবে এই রোগ ‘মানুষের শরীরে ঢোকে তা নিয়ে অনেকদিন ধরে অনেক বিজ্ঞানী গবেষণা করেছেন, কিন্তু আসল কথাটা জানতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত সেই কথাটা জানতে পারলেন রোনাল্ড রস।


স্যার রোনাল্ড রস একজন ইংরেজ চিকিৎসক। তাঁর জন্ম হয়েছিল ভারতের আলমোড়া নামে এক পাহাড়ি শহরে ১৮৫৭ সালের ১৩ মে। 


তিনি ডাক্তারি শিখেছিলেন লন্ডনের সেন্ট বার্থোলোমিউ হাসপাতালে। চব্বিশ বছর বয়েসে ডাক্তারির চাকরি নিয়ে তিনি ভারতে চলে আসেন।


যখন তিনি কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের চাকরি করছিলেন তখন থেকেই ম্যালেরিয়ার জীবাণু নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। 


তিনি এমন একটা দেশে চাকরি করছিলেন যেখানে হাজারে হাজারে লোক ম্যালেরিয়া রোগের কবলে পড়ে। এতে তাঁর কাজের খুবই সুবিধে হল। রস জানতে পারলেন যে, অ্যানোফিলিস নামে একজাতীয় স্ত্রী-মশার কাপড় থেকেই ম্যালেরিয়া হয়। 


কীভাবে সেই রোগের জীবাণু মানুষের শরীরে ঢোকে, তাও রস কিছুদিনের মধ্যেই জেনে ফেললেন। তখন তিনি কলকাতা থেকে বদলি হয়ে গেছেন সেকেন্দ্রাবাদে। সেখান থেকে যান আফ্রিকায়।

আরও পড়ুন… 

  1. উইলিয়াম হার্ভে (William Harvey)
  2. হামফ্রি ডেভি (Humphrey Davy)
  3. জর্জ স্টিভেনসন (George Stevenson)

রসের কাজই হয়েছিল মশাদের ধরে তাদের দেহের নানা অংশ অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ফেলে পরীক্ষা করা। এভাবে পরীক্ষা করতে করতে রস জানতে পারলেন যে, অ্যানোফিলিস স্ত্রী মশার শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু বাসা বাঁধে। 


সেই মশা যদি কোনো লোককে কামড়ায় তাহলে তার শরীরে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ঢুকে যাবে। আবার ম্যালেরিয়ার রোগীকে অ্যানোফিলিস মশা কামড়াবার পরে সেই মশা অন্য কোনো সুস্থ লোককে কামড়ালে ওই সুস্থ লোকটিরও ম্যালেরিয়া হবে। কেননা তার শরীরেও তখন জীবাণু ঢুকে যাবে।


এই বিরাট আবিষ্কারের জন্য দেশে দেশে রোনাল্ড রসের নাম ছড়িয়ে পড়ল। তিনি এরপর লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যাপক হন। ইংল্যান্ডের সরকার রসকে ‘স্যার’ উপাধি দেয়।


১৯০২ সালে রস নোবেল পুরস্কার পান। ১৯৩২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পঁচাত্তর বছর বয়েসে রসের মৃত্যু হয়।


Source:


  1. https://www.nobelprize.org/prizes/medicine/1902/ross/biographical/
  2. https://www.cdc.gov/malaria/about/history/ross.html
  3. https://www.lshtm.ac.uk/aboutus/introducing/history/frieze/sir-ronald-ross
  4. https://royalsocietypublishing.org/doi/pdf/10.1098/rsbm.1933.0006
  5. https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/malaria
  6. https://journals.plos.org/plosone/article?id=10.1371/journal.pone.0079276
বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস | ম্যালেরিয়া দমনে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য
Advertisements

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top