বর্ষা মানেই স্যাঁতসেঁতে ভাব, আর্দ্রতা । রােদের দেখা নেই, আকাশ জুড়ে মেঘের ছড়াছড়ি, কখনো বা মেঘের অনুপস্থিতি, রাস্তায় রাস্তায় পানি জমা। এ সময় নানা রকম চর্মরােগ বাড়তে পারে। ত্বকের কিছু সমস্যাও বেশি দেখা যায়।
বর্ষায় বাড়ে ত্বকের সমস্যা । কিভাবে ত্বক সুস্থ রাখবেন ?
Skin problems increase in the rainy season. How to keep skin healthy?
বর্ষা মৌসুমে অত্যান্ত পরিচিত সংক্রমণ হলাে দাদ বা রিংওয়ার্ম ছত্রাকের সংক্রমণ। এ ছাড়া লােমের গােড়ায় প্রদাহ, এটি মাথায় এবং গলার অংশে, বগলে (বাহুমূল), কুঁচকিতে, এবং নিতম্বে হয়ে থাকে, যাকে বলা হয় ফলিকুলাইটিস এবং তার সাথে মুখমন্ডলে ব্রনের প্রকোপও মারাত্বক বেড়ে যেতে পারে। পরিবেশের আর্দ্রতা, অতিরিক্ত ঘাম, রিংওয়ার্ম ছত্রাকের সংক্রমণ, ফলিকুলাইটিস এবং গরম আবহাওয়ার কারণে এসব হয়।
অতিরিক্ত ঘাম : Excessive sweating
গরম ও আর্দ্র স্যাঁতস্যাতে আবহাওয়ায় প্রচুর ঘাম হয়। কুঁচকি, বগল, হাত ও পায়ের তালু, মাথা ও মুখ বেশি ঘামে । অনেক মানুষেরই ঘামে খুব দুর্গন্ধ হয়, যা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। গরমে যত দ্রুত সম্ভব ভেজা জামাকাপড় পরিবর্তন করে নেবেন। হালকা-পাতলা সাদা আরামদায়ক, সম্ভব হলে সুতির কাপড় পরুন, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারবে অতি সহজেই।
টাইট ও কৃত্রিম তন্তুর কাপড়ে ঘাম বেশি হয়। ফ্যান বা যেখানে বাতাস আছে, সেখানে বসে কাজ করুন। দুর্গন্ধ হওয়ার জন্য একধরনের ব্যাকটেরিয়া দায়ী । রােজ ভালাে করে সাবান দিয়ে বগল, শরীরের ভাঁজ ইত্যাদি ঘষে গােসল করবেন। ঘামে ভেজা জামা, মােজা ইত্যাদি না ধুয়ে পরবেন না।
ভালাে ট্যালকম পাউডার কখনাে উপকারে আসতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা, মেনােপজের পর অতিরিক্ত ঘাম হয়। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অ্যালার্জি : Allergies
গরম ও বর্ষায় অ্যালার্জির প্রকোপও বাড়ে। যাঁরা রান্নাঘরে বা ধোঁয়ামােছার কাজ করেন, এ সময় তাদের হাতের আঙুল ভেজা থাকার কারণে অ্যাকজিমা দেখা দেয়। হাত, পা, আঙুলের ফঁক, পিঠ—এসব জায়গায় লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি হতে পারে, ঘা হতে পারে।

পানির কাজ করলে হাতে দস্তানা বা পলিথিন/প্লাস্টিকের হ্যান্ড গ্লাভস পরতে পারেন বা কাজ শেষে দ্রুত পরিষ্কার কাপড়ে মুছে হাত শুকিয়ে করে নিন। চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহারোপযোগী মলম, অ্যান্টিহিস্টামিন বড়ি বা স্কিন মলম ব্যবহার করতে পারেন।
ঘামাচি
বর্ষায় থেমে থাকে না ঘামাচির প্রকোপও । বর্ষাকালের অন্যান্য সমস্যার সাথে বাড়তে থাকে ঘামাচির বিস্তার। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা, শিশুরা এতে কষ্ট পায় বেশি। শিশুদের মাথা, বগল, হাতের পিঠ, কনুই ও হাঁটুর ভাঁজ, রানের ভাঁজে ঘামাচি বেশি হয়।
ঘর্মগ্রন্থির নালির গভীরে ব্লক হওয়ার জন্য এটি হয়। লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাম বের হতে বাধা পায়। তখন ত্বক বিভিন্নভাবে ফুলে উঠে । ঘামাচি খুব চুলকায় আর জ্বালা করে। অনেক সময় নখ দিয়ে চুলকানির জন্য রক্ত বের হয়।। সংক্রমণও হতে পারে। ত্বক, কাপড়চোপড় শুষ্ক রাখতে চেষ্টা করবেন। বেশি ঘেমে গেলে কাপড় পরবির্তন করে নেবেন।
Conclusion:
প্রতিদিন এক বা দুবার গােসল করুন। ত্বক পরিষ্কার রাখুন। অন্য কারও জামাকাপড়, তােয়ালে, চাদর, বালিশ ব্যবহার করবেন না। বাইরে গেলে নােংরা বা অপরিচ্ছন্ন। পানির সংস্পর্শে এলে অবশ্যই ধুয়ে ফেলবেন। প্রচুর পানি পান করবেন, যাতে পানিশূন্যতা না হয়। চুলকানি, ত্বকে দাদ বা লালচে গােল ছােপ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Last line: বর্ষায় বাড়ে ত্বকের সমস্যা । কিভাবে ত্বক সুস্থ রাখবেন ?