নারীরা কেন সফল হতে পারে না ? পিতা-মাতার নির্বুদ্ধিতা, মানসিক বিড়ম্বনা, দাসত্ব, পরাধীনতা, পাছে লোকে কিছু বলে, কুপ্রথাসহ আরও নানাবিধ কারণ নারীর সফলতার পথের বাধা । আজকে আমরা আলোচনা করব নারীরা কেন সফল হতে পারে না এর কতিপয় কিছু দিক নিয়ে।
নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
জীবনে চলার পথটা কঠিন। আর সফলভাবে চলা তো যুদ্ধের মতোই। কেউবা এ যুদ্ধে বিজয়ী হয় অথবা কেউ পড়ে যায় মুখ থুবড়ে। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
আর রইল নারীদের কথা, কখনো বা মনে হয় নারী হয়ে জন্মানোটা পাপ। কারণ অন্ধকারময় সমাজ ব্যাবস্থায় একজন সফল মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সহজ কথা নয়। আর নারী হলে তো কথায় নেই।
Advertisements
কর্মক্ষেত্রে নারী যত সফল, ব্যক্তিজীবনে নয়
আমাদের ধারণা, যখন নারী সমান অধিকার পাচ্ছে তবে তারা সহজেই সফল হতে কেন পারবেনা। হ্যাঁ নারী এখন সমান অধিকার পায়। কিন্তু কেউবা অধিকারের এডভান্টেজ নিয়ে নিজেকে বিলিয়ে দেয় কেউ নামের অধিকারের অন্ধকারেই রয়ে যায়। সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা নারীর সংখ্যা খুব কমই।
নারীদের সফল হতে না পারার কারণ
নারীদের পিছিয়ে থাকার কিছু কারণ উল্লেখ্য করা হলোঃ
১. পিতা-মাতার নির্বুদ্ধিতা
যখন একজন সন্তান জন্মগ্রহণ করে সে পুরোটাই পিতামাতার উপর নির্ভরশীল। তারা যেভাবে গড়ে তুলবে ঠিক সেভাবেই গড়ে উঠবে সন্তান। আর এখানেই আমাদের ধ্বংসের শুরু। শিক্ষিত পিতামাতা কখোনো প্রতিবেশীদের মন্তব্যে গ্রাহ্য করে না। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
তারা ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তানকে আলাদা করে দেখে না। তাদের পরিবারের সুশিক্ষা একজন মেয়ে সন্তানকে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দিতে সক্ষম। কিন্তু একটা অশিক্ষিত পরিবার একজন মেয়ে সন্তানকে সফলতা তো দূর হয়তো গ্রাহ্যই করে না।
২. মানসিক বিড়ম্বনা
একজন নারী মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থা হতে লাঞ্ছিত হতে থাকে। যখন জানতে পারে কেউ মেয়ে সন্তান হবে তখন অনেকেই মুখ কালো করে ফেলে,নানারকম মন্তব্য করতে থাকে। গর্ভধারিণী ও কন্যা সন্তান নিয়ে হয়তো ভয় পেতে থাকেন। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
এভাবেই চলতে থাকে নানা ধাপে ধাপে মানসিক বিড়ম্বনার মধ্য দিয়ে জীবন পার করা। হয়তো এর মধ্য দিয়েই কেউ মন শক্ত করে সফলতার দিকে এগোতে পারে,কেউবা ঝরে পড়ে।
৩. দাসত্ব
পড়াশোনার সুযোগ ভালোভাবে পায় শিক্ষিত পরিবারের মেয়েগুলো। কিছু কিছু মেয়েরা হয় পরিবারের দাসী। সকলের মন রক্ষা করে চলতে চলতে তারা নিজেকে ভুলে যায়। নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টার কথা হয়তো তাদের মনেও আসেনা।
৪. পরাধীনতা
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী চিরকাল পরাধীন ঠিক খাঁচায় বন্দি পাখির মতোই। বর্তমানে নারী শিক্ষার সুযোগ থাকলেও পরিবার, শিক্ষাক্ষেত্র,কর্মক্ষেত্রে নানাভাবে তারা বাঁধা। কোন নারী ইচ্ছেমতো বাইরে যেতে পারেনা আর একারণেই নানাভাবে তারা একটি গন্ডির মধ্য আটকে যায়।
৫. পাছে লোকে কিছু বলে
মানুষ সর্বদা নিন্দুকের ভয় পায়। আর নারীরা আরও বেশী। ভয় পেতে পেতে তারা নিজেকে গুটিয়ে নেয়। এভাবেই শেষ হয়ে যায় কিছু নারীর স্বপ্ন। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
৬. নারীত্ব
নারীর সবচেয়ে বড়ো শত্রু নারী সত্ত্বা। যদি এ সত্ত্বার কোন অস্তিত্বই না থাকতো তবে নারী এত লাঞ্ছিত হতোনা, তাদের পেছনে এত কটুক্তি হতোনা। আর নারীও একজন পুরুষের মতোই বুক ফুলিয়ে চলতে পারতো। ভয়ে গুটিয়ে গিয়ে নিজের ইচ্ছেগুলোকে দাবিয়ে রাখতে হতোনা।
৭. কুপ্রথা
আমাদের দেশে এখনো কিছু প্রথা রয়েছে যা নারীদের স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করতে যথেষ্ট। কম বয়সে এখনো বিয়ে দিয়ে বিনষ্ট করা হয় কিছু অঙ্কুর। আর এখনো পড়াশোনার অর্থ বা ব্যবসাক্ষেত্রে বিনিয়োগের বদলে জমানো হয় যৌতুকের অর্থ। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
৮. আবেগপ্রবণতা
মানুষের ধ্বংসের অন্যতম কারণগুলোর একটি হলো আবেগ। নারী তো এক্ষেত্রে বেশিই এগিয়ে। আবেগের বশে ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ নারী সফলতার অন্তরায়। নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
৯. কর্মবিমুখতা
কিছু নারী স্রোতে গা ভাসাতে পছন্দ করে। পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি এই উক্তিটাকে তারা নিজেের জীবনে প্রয়োগ করে দেখতেই চায় না। কারণ তারা অলস প্রকৃতির। শত লাঞ্ছনা, অপমান সহ্য করবে তাও নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করবে না।
১০. অল্পতেই ভেঙ্গে পড়া
“হোঁচট খাওয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়।” নতুন উদ্যমে কাজ শুরুর সংকেত। কিন্তু একজন নারী যখন মুখ থুবড়ে পড়ে তখন হাল ছেড়ে দেয়। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা হয়তো করে না। তাই নারীর এত দুঃখ।
Conclusion:
হাল ছেড়ে দেওয়া কোন সল্যুশনস না। নিজেকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভালোবাসতে হবে নিজেকে। পরিশ্রম করতে হবে নিজেকে প্রমাণ করার বিন্দু পরিমাণ সুযোগটাও হাতছাড়া করা যাবেনা।
নারীরা কেন সফল হতে পারে না ?
Advertisements