দুরারােগ্য নয় মস্তিষ্কের টিউমার (Brain tumors are not incurable)

দুরারােগ্য নয় মস্তিষ্কের টিউমার



শরীরের যে কোনাে টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে টিউমার বলা হয়। মস্তিষ্কের টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্রেইন টিউমার বা মস্তিষ্কের টিউমার বলে। 
বিনাইন টিউমার অপেক্ষাকৃত ভালাে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করালে এটি পুরােপুরি নির্মূল সম্ভব।
গত ৮ জুন ছিল বিশ্ব ব্রেন টিউমার দিবস। প্রতি বছর এই দিনে ব্রেন টিউমারের মতাে মারাত্মক রােগ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে দিবসটি পালন করা হয়। 

দুরারােগ্য নয় মস্তিষ্কের টিউমার (Brain tumors are not incurable)

২০০০ সাল থেকে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত রােগীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে, তাদের সাহস জোগাতে এবং বিশ্ববাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে দিনটি পালিত হয়ে আসছে। 
শরীরের যে কোনাে টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে টিউমার বলা হয়। মস্তিষ্কের টিস্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্রেইন টিউমার বা। মস্তিষ্কের টিউমার বলে। 
বিনাইন টিউমার অপেক্ষাকৃত ভালাে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করালে এটি পুরােপুরি নির্মূল সম্ভব। মেলিগন্যান্ট টিউমার খারাপ প্রকৃতির। এটাকেই বলে ব্রেইন বা মস্তিষ্কের ক্যান্সার। 
সব ব্রেইন টিউমার খারাপ । প্রকৃতির বা ক্যান্সার না হলেও অবস্থানগত কারণে এর চিকিৎসা দ্রুত ও জরুরি হয়ে পড়ে। 
অধিকাংশ টিউমারের উৎপত্তি মস্তিষ্কে হলেও বেশকিছু টিউমার শরীরের অন্যত্র থেকে মস্তিষ্কে দানা বাধে। যে কোনাে বয়সের নারী-পুরুষ এই টিউমারে আক্রান্ত হতে পারে।
 ব্রেন (মস্তিষ্ক) টিউমারের কথা শুনলেই মনটা আঁতকে ওঠে। ভয়াবহ কিছু মনে ভেসে ওঠে। কারণও আছে। 
মস্তিষ্ক খুব বিশেষ একটা জায়গা। এখানে অস্ত্রোপচার বেশ কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। আমাদের দেশে একসময় ব্রেনের অস্ত্রোপচার হতাে না বললেই চলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাও এগিয়েছে অনেকখানি। 
এখন আমাদের দেশেই আধুনিক মানের মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার হচ্ছে। মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কম নয়। 
প্রতি বছর সারাবিশ্বে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হন। 
ব্রেন টিউমার দুই ধরনের হতে পারে। প্রাইমারি বা যেটি মস্তিষ্কে হয় এবং সেকেন্ডারি বা যেটি শরীরের অন্য অংশ থেকে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।

Brain tumors 

মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেহেতু মস্তিষ্ক চারদিকে শক্ত হাড় দিয়ে ঘেরা থাকে, তাই এতে কোনাে টিউমার হলে তা মস্তিষ্কের চাপ বাড়ায়। একে বলে ইন্ট্রাক্রনিয়াল। 
প্রেসার বেড়ে যাওয়া এর লক্ষণ হলাে মাথাব্যথা। এটি সাধারণত ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ে, হাঁচি-কাশি দিলে বা মলত্যাগের সময় বাড়ে। 
বমিও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। বমি বা বমি বমি ভাব অনেকদিন ধরেই চলতে থাকে। বমি বন্ধের ওষুধেও কমে না।
মস্তিষ্কের কোন অংশে টিউমার তার ওপর নির্ভর করে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 
যেমন- ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, শরীরের একপাশ অবশ, স্মৃতিভ্রম, চোখে দেখার সমস্যা, দূরে দেখার সমস্যা, খিচুনি, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি। 
চিকিৎসক এমন লক্ষণের রােগীকে শারীরিক পরীক্ষা
করে আরও নিশ্চিত হন। রােগ নির্ণয় করার জন্য এমআরআই অব ব্রেন পরীক্ষা করলে রােগ ধরা পড়ে সহজেই। 
এ ছাড়া আরও কিছু পরীক্ষার প্রয়ােজন হতে পারে। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে আছে সার্জারি, রেডিওথেরাপি ও কেমােথেরাপি। 
অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশে মনে হয় ব্রেন টিউমারের সুচিকিৎসা নেই। এ ধারণা একেবারেই ভুল। আমাদের দেশে ব্রেন টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে। 
মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ানাের জন্য কিছু নিয়ম মানতে হবে, যেমন- হঠাৎ করে উত্তেজিত হওয়া যাবে না, পরিস্থিতি মূল্যায়নে যথেষ্ট সময় নিতে হবে, যুক্তি দিয়ে সবকিছু বিচার করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, প্রচুর পানি পান করতে হবে, সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে, পরিমিত পরিমাণে ঘুমানাের চেষ্টা করতে হবে, কাজের ভেতর থাকতে চেষ্টা করুন, প্রকৃতি নিয়ে ভাবুন এবং নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখুন । 
আর এভাবেই মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। ধীরে ধীরে মুক্ত হবেন আপনি এই রােগ থেকে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে আধুনিক চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায়। 
তবে এ সার্জারি বেশ  ব্যয়সাপেক্ষ। সব ধরনের টিউমারে যে অপারেশন লাগবে, তা ঠিক নয়। কিছু টিউমার ওষুধে সেরে যায়। 

Conclusion:

অনেকে রােগ নিয়ে বসে থাকেন, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে চান না। দেরি করলে বিপদ বাড়ে। তাই দেরি না করে চিকিৎসককে দেখান। আর বলে ফেলুন দুরারােগ্য নয় মস্তিষ্কের টিউমার (Brain tumors are not incurable)
[সহকারী অধ্যাপক, নিউরােসার্জারি বিভাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল]

Last line: দুরারােগ্য নয় মস্তিষ্কের টিউমার (Brain tumors are not incurable)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top