শাক-সবজি ছাড়া মানব স্বাস্থ্য কেমন কল্পনা করা উচিৎ! শাক-সবজি ছাড়া কি সুস্থভাবে বেঁচে থাকা যায়?
না যায় না। কারণ শাক-সবজি হতে আমরা যতটা পুষ্টি পাই তা অন্যকোন খাবারে পাইনা। পুষ্টি চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি শাক-সবজির কারণে আমরা বিভিন্ন রোগ হতে মুক্তি পাই। আবার কোন কোন সময় কিছু শাক-সবজি এড়িয়ে চলা উচিৎ।
চিকিৎসায় শাক-সবজির ব্যবহার করুন । সুস্থ্য থাকুন

চিকিৎসায় শাক-সবজির ব্যবহার করুন । সুস্থ্য থাকুন
১. ডায়াবেটিস:
ডায়াবেটিস রোগ সাংঘাতিক আকারে মানুষের উপরে আঘাত হানছে। ডায়াবেটিস এর মূল কারণ হলো রক্তে সুক্রোজ এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
প্রয়োজনীয় শাকসবজি
তেলাকুচা, উচ্ছে-করলা,মেথির শাক,নিমপাতা, পলতে ও হেলেঞ্চার শাক, সাদা বেগুন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও ডুমুর, থোড়,মোচা, ঢ্যাঁড়শ, পালং,চিকনি বেশি বেশি পরিমাণে খেতে হবে।
বর্জনীয় শাক-সবজি
কার্বোহাইড্রেট উৎপাদনকারী শাক-সবজি খাওয়া উচিৎ নয়। যেমন-আলু, বীট, ওল, রাঙ্গাআলু, কচু, খামালু ইত্যাদি।
২. রক্তচাপ
হাই-ব্লাডপ্রেসার বর্তমানে অন্যতম স্বাস্থ সমস্যাগুলোর মধ্য একটি। বিভিন্ন কারণে এই রোগটি হয়ে থাকে। এই সমস্যায় পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি গ্রহণযোগ্য। কারণ পটাশিয়ামের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ শাক-সবজি গুলো হলো- আলু, কচু, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙ্গে, উচ্ছে, বীট, গাজর, মটরশুঁটি, রাঙ্গাআলু, পালং, বাঁধাকপি এবং নটেশাক, সজনেপাতা, কাচা রসুন ইত্যাদি।
আরও পড়ুন… কঠিন অসুখ সারাতে কাঁচা পেঁপে | কাঁচা পেঁপের উপকারিতা
৩. স্তনের দুধ বৃদ্ধিতে:
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে শাক-সবজির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। মায়ের বুকের দুধের পুষ্টি হতে শিশুকে বঞ্চিত করা উচিৎ নয় তাই স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া জরুরি। এই সময় মায়েদের বেশি বেশি শাকের ঝোল খেতে হবে।
৪. হাত-পা জ্বালায় :
যদি কখোনো হাত-পা অথবা মাথা জ্বালা করে তবে হেলেঞ্চা, বথুয়া ও তেলাকুচার শাক খেতে হবে।
৫. পাতলা পায়খানা
পাতলা পায়খানা এমন এক সমস্যা যে এসময়ে খাবার বিষয়ে খুব সাবধান থাকতে হয়। কেননা পেটের গন্ডগোলের কারণেই পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। সজনে পাতার ঝোল পাতলা পায়খানা হলে বেশি বেশি খেতে হবে। এছাড়াও বাঁধাকপি, বথুয়া, মেতি, গাঁদাল, থানকুনি, কাঁচাপেঁপে, কাচাকলা ইত্যাদির ঝোল করতে হবে।
৬. লিউকোরিয়া
মেয়েদের সাধারণ সমস্যাগুলোর মধ্য একটি লিউকোরিয়া। যদিও বলা হয়ে থাকে সাধারণ সমস্যা তাই বলেই সাধারণ সমস্যা! না অবশ্যই সাধারণ সমস্যা না। এই রোগে শরীর দূর্বল হয়ে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয় এবং দেহে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
রোগের শুরুর দিক হতেই রোগীকে কাঁচকলা, থোড়, মোচা এবং কুলেখাড়ার খেলে এ রোগ সেরে যাবে।
আরও পড়ুন… ৫টি জটিল রোগ | জেনে নিন এবং সাবধান হোন আজই
৭. শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য
শাক-সবজি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। এরমধ্য কিছু শাক-সবজি শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন: লাউ, লাউশাক, হেলেঞ্চা, শশা, শুষনি, পাটশাক, লালতে, পুঁইশাক ইত্যাদি।
৮.ঋতুরোগে:
কম পরিমাণে স্রাব এবং তা অনিয়মিত হলে মেয়েরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। তবে বিভিন্ন শাক-সবজির মাধ্যমেই আমরা ডাক্তার ছাড়াই এ সমস্যার সমাধান করতে পারি। কারণ শাক-সবজির ভেতরও এ রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে। গিমা, মেথির শাক, থানকুনি, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, শীম, বরবটি, সজনের ফুল ও ডাঁটা, উচ্ছে, ওল ও চালকুমড়ো ভীষণ উপকারী।
৯. অনিদ্রা
প্রতিদিন সেলারি, নুনিয়া ও সুষনি প্রভৃতি শাক খেলে ঘুমের সমস্যা দূর হয়।
১০. প্রসাবের সমস্যায়
ক্লিয়ারভাবে প্রসাব নিঃসরিত না হলে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয়। আবার এই সমস্যা হতে জটিল রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে।
পুঁইশাক, নুনিয়া, লেটুস, বথুয়া, সরষে, আলু ইত্যাদি খেলে প্রসাবের পরিমাণ বাড়ে ও সঠিকভাবে নিঃসরিত ও হয়।
আরও পড়ুন… হৃদরোগ এবং আধুনিক প্রযুক্তি
Conclusion
ছোটকাল হতে আমরা জেনে এসেছি শাক-সবজি দেহের অনেক পুষ্টি চাহিদা মেটায়। আজ জানলাম শাক-সবজি দেহের রোগ সারাতেও সক্ষম। নিয়ম অনুযায়ী বেশি বেশি শাক-সবজি খাওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসায় শাক-সবজির ব্যবহার করুন । সুস্থ্য থাকুন