চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশল | কি করবেন | কি করবেন না

আজকে আলোচনা করব  চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশল বিষয়ে । বর্তমান সময়ে যেকোনো চাকরিতেই যোগদান খুবই কঠিন । সারাদেশে বেকারত্ব, শিক্ষিত লোকদের কর্মসংস্থান ঘাটতি, স্বজনপ্রীতি হু হু করে বেড়েই চলেছে । জীবিকার তাগিদে মানুষ চাকরী খুঁজে । 

চাকরীর জন্য প্রতিনিয়ত বা প্রায়শই অনেকে ইন্টারভিউ দিতে যান । কিন্তু অনেকেই জানেন না ইন্টারভিউ কিভাবে দিতে হয়, ইন্টারভিউয়ে কি করবেন, কি করবেন না সেসব বিষয়ে অনেকেই অজ্ঞ ।

তাই আজকে সফল কিছু ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা শেষে আপনাদের উদ্যেশ্যে লিখতে বসলাম ।

 চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশল | কি করবেন | কি করবেন না


চাকরির জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া থেকেই শুরু হয় 
কাংক্ষিত পদের জন্য নিজেকে যােগায প্রমাণ করার চেষ্টা। নিজের যােগ্যতা, দক্ষতা, কর্মনৈপুণ্য, সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার পরিচয় দিতে হয় প্রতিটি ধাপেই। 

জীবনবৃত্তান্ত আগে থেকে তৈরি করা থাকলেও কাংক্ষিত পদটির উপযােগী করেই তা হালনাগাদ করে নিতে হয়। কর্মনৈপুণ্যসংক্রান্ত জ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞান যেমন লিখিত পরীক্ষার জন্য জরুরি, তেমনি সাক্ষাৎকার বা ইন্টারভিউ পর্বেও এগুলাে কাজে লাগতে পারে। 



সাক্ষাৎকার পর্বটি নিয়ােগকর্তার সঙ্গে আপনার প্রথম আনুষ্ঠানিক আলাপের সুযােগ। তাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণও বটে। আর চাকরির মৌখিক সাক্ষাৎকারে আপনার পােশাক-আশাক থেকে শুরু করে আচার-আচরণ-সব বিষয়েই সচেতন থাকতে হয়। 

সাক্ষাৎকার পর্বে হতে হবে আত্মবিশ্বাসী

যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছেন, সেটি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিন বিস্তারিতভাবে। খেয়াল রাখুন আনুষ্ঠানিক পােশাক ও অনুষঙ্গ বেছে নিন চাকরির সাক্ষাৎকারের জন্য। ইস্ত্রি করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পরিপারটি পােশাকে যাবেন।

আপনার লুক যেন আনুষ্ঠানিক’ হয়। সাক্ষাৎ্কারের নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌছে প্রয়ােজনে সেখানে পুনরায় সতেজ হয়ে নিন। জুতার উপরিভাগে রাস্তার কাদা ছিটে এলে মুছে যেলুন।


সাক্ষাৎকার দিতে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে রাখুন প্রয়ােজনীয় সব কাগজপত্র। এছাড়া পানি, টিস্যু পেপার, চিরুনি রাখা ভালা। তবে সাক্ষাৎকার কক্ষে এসব নিয়ে গিয়ে বােঝা বাড়াবেন না।

সাক্ষাৎকার কক্ষে ডাক পড়লে অনুমতি নিয়ে ঢুকবেন। ভেতরে ঢুকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাবেন, সালাম দেবেন।

ইতিবাচক দেহভঙ্গি বজায় রাখুন। ভদ্রতা বজায় রাখুন। অনুমতি নিয়ে ঋজু, সাবলীল ভঙ্গিতে বসবেন। সবার চোখে চোখ রেখে আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে কথা বলবেন। হালকা হাসিও থাকুক মুখে। 

সবশেষে ধন্যবাদ দিয়ে বের হয়ে আসবেন। আলাপ-আলােচনায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজের অভিজ্ঞতা কিংবা অভিজ্ঞতা না থাকলে ওই পরিস্থিতিতে আপনি কী করতেন, তা বলতে হতে পারে। বুদ্ধিমত্তার প্রকাশ চাই এসব ক্ষেত্রে।


আগে কোথাও চাকরি না করলেও নিজেকে অনভিজ্ঞ হিসেবে উপস্থাপন করবেন না। ছাত্রাবস্থায় করা খণ্ডকালীন চাকরি, শিক্ষানবিশি, প্রশিক্ষণ কিংবা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের অভিজ্ঞতা সামনে আনতে পারেন। 


এসব তথ্য জীবনবৃত্তান্তেও যােগ করে রাখুন আগেই। নিজের সম্পর্কে বলতে হলে পারিবারিক তথ্যে বেশি গুরুত্ব দেবেন না, বরং নিজের নাম বলার পরেই কর্মনৈপুণ্যসংক্রান্ত তথ্যে নিজেকে তুলে ধরুন। 

পেশাগত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাজীবন সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন। প্রশ্ন করার সুযােগ পেলে বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন করুন। সেখানে কাজ করলে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে হতে পারে বা কত দিনের মধ্যে যােগ দিতে হতে পারে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারেন।

বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েও (নিয়ােগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা না থাকলে) প্রশ্ন করতে পারেন।

ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় যা করবেন না

  1.  খুব জাকজমক পােশাক পরবেন না।
  2.  পােশাকের হাতা গুটিয়ে রাখবেন না।
  3. ঝুঁকে বা হেলান দিয়ে বসবেন না।
  4. মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেবেন না।
  5. চিন্তিত বা ভয় পাওয়া ভাব প্রকাশ করবেন না।

উপরিউক্ত বিষয়গুলো নিজেরমত করে অনুশীলন করতে থাকুন । পজিটিভ চিন্তাভাবনা করতে থাকুন । আমি পারব না বা আমাকে দিয়ে হবে না এরকম কিছু ভাববেন না । 


আপনি কি ভেবে দেখেছেন চাকরী কেন হয় না ? চাকরী না হওয়ার পেছনে আছে অনভিজ্ঞতা । আপনি বেকার থাকা অবস্থায় কোনো পরিচিত বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে বিভিন্ন কাজে অংশ নিন । নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলি বাড়ান । 

নিজেকে সব সময় বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাখুন । হতাশা, নিরাশা,  মানসিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠুন । আপনি যেখানে দাড়িয়ে আছেন সেখান থেকেই শুরু করুন এবং নিজের সেরাটা দিন ।
একটা কথা গ্রাম বাংলায় প্রচলিত আছে ! যদি ঠেলা গাড়ি চালাইতে হয় সেটাও মন দিয়ে চলাও । বুঝতে পারছেন তো কথার মানেটা ? আপনি যেই কাজই করেন না কেন, যে চাকরিই করতেন চান না কেন, আগে নিজের কাজকে ভালোবাসুন ।




Conclusion: 

দেশে চাকরি নেই; কেউ নাকি চাকরি পায় না। কিন্তু টেলিটক জবস, বিডিজবস-এর মতো ওয়েবসাইটে হাজারে ৫/৬ টার বেশি complete profile পাবেন না। ফেসবুক, টিকটকে, ভিগোতে – বেকারত্ব নিয়ে স্ট্যাটাস দেবে, কিন্তু লিঙ্কডইন, বিজবস এ কারো প্রোফাইল রেডি না!
কই খাইতে গেলাম, কই ঘুরতে গেলাম, কই আড্ডা দিলাম, কার বৌভাতে গেলাম সবই আপডেট আছে, নিজের সিভিটা আপডেট হয় না! পাঁচটা মেয়েকে পটানোর জন্য ৫০ রকম ফন্দি আঁটে, কিন্তু পাঁচটা আলাদা প্রতিষ্ঠানে পাঁচ রকম চাকরির জন্য ক্যরিয়ার অবজেক্টিভ একই!

তাহলে আপনি চাকরি পাবেন কি করে ? প্রথমে নিজের লক্ষ ঠিক করুন । তারপর এগিয়ে যান । জয় আপনার সুনিশ্চিত ।

চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশল | কি করবেন | কি করবেন না

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top