কিভাবে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয় ? How is child determined?

কিভাবে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয় ? How is child determined?

আমরা জানি, কোনো
জীবের জীবকোষের নিউক্লিয়াসের
ভেতর

নির্দিষ্টসংখ্যক ক্রোমোজোম
থাকে। মানুষের জীবকোষে
ক্রোমোজোমের সংখ্যা ২৩ জোড়া (মোট ৪৬টি)। 
এই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের ভেতর এক জোড়া ক্রোমোজোমকে লিঙ্গ নির্ধারক
বা সেক্স ক্রোমোজোম
বলে। 

ছেলেদের বেলায়
এই এক জোড়া ক্রোমোজোম দুটি
ভিন্ন
, যার একটিকে X, অন্যটিকে
Y
নাম দেওয়া হয়েছেছবিতে দেখ, X ক্রোমোজোমটি লম্বা এবং Y ক্রোমোজোমটি ছোট।
মেয়েদের বেলায় এই এক জোড়া সেক্স ক্রোমোজোমের দুটিই
X ক্রোমোজোম। সেক্স ক্রোমোজোম ছাড়া বাকি অন্য সব ক্রোমোজোমকে অটোজোম বলে।

Gender determination
Gender determination


লিঙ্গ নির্ধারণের সংজ্ঞা (Gender determination definition)

মানুষের শরীরের সব কোষেই ২৩
জোড়া (বা ৪৬টি) ক্রোমোজোম থাকলেও সন্তান জম্ন দেওয়ার জন্য
মেয়েদের ডিম্বাণু এবং ছেলেদের শুক্রাণু এর ব্যতিক্রম। এই কোষগুলোতে অর্ধেকসংখ্যক
ক্রোমোজোম থাকে। 

২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের প্রতি জোড়া থেকে একটি ক্রোমোজোম নিয়ে
ডিম্বাণু তৈরি হয়
,
কাজেই সব ডিম্বাণুতেই ২২টি অটোজম এবং একটি X ক্রোমোজোম থাকে। 

ছেলেদের সেক্স ক্রোমোজোমে যেহেতু X এবং Y
দুটিই আছে, তাই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের
প্রত্যেকটি থেকে একটি করে ক্রোমোজোম দিয়ে শুক্রাণু তৈরি করা হলে দুটি ভিন্ন ধরনের
শুক্রাণু তৈরী করা সম্ভব।

একটিতে থাকবে ২২টি অটোজম
এবং একটি ক্রোমোজোম
, অন্যটিতে থাকবে ২২টি অটোজাম এবং একটি
Y ক্রোমোজোম ।


মা

বাবা

সন্তান

ডিম্বাণুর ২২টি অটোজোম + X

শুক্রাণুর ২২টি অটোজোম + X

২২ জোড়া অটোজোম + XX (কন্যা)

ডিম্বাণুর ২২টি অটোজোম + X

শুক্রাণুর ২২টি অটোজোম + Y

২২ জোড়া অটোজোম + XX (পুত্র)

 

মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম
মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম

ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিলে গর্ভধঘারণ হয় এবং তোমরা দেখতে পাচ্ছ দুটি ভিন্নবাবে
গর্ভধারণ সম্ভব। অর্থাৎ মিলিত কোষে মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে এবং সেটি ধীরে
ধীরে পূর্ণাঙ্গ মানবসন্তানে জন্ম নেয়।

যদি এটি ২২ জোড়া অটোজোম এবং XY  সেক্স ক্রোমোজোম নিয়ে বেড়ে উঠে
তাহলে কন্যাসন্তান হিসেবে জন্ম নেয়। যদি এটি ২২ জোড়া অটোজোম এবং
XY  সেক্স ক্রোমোজোম নিয়ে গড়ে ওঠে,
তাহলে পুত্রসন্তান হিসেবে জন্ম নেয় (চিত্র নিচে)।

একজন সুস্থ সন্তান, সে ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন,
মা-বাবার জন্য অনেক বড় একটি আশীর্বাদ, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে অজ্ঞতা এবং
কুসংস্কারের কারণে অনেকে ছেলে সন্তানকে প্রাধান্য দেয়। 

শুধু তা-ই নয়, মেয়ের জন্ম
হলে মাকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, সন্তান কী ছেলে সন্তান
হবে না মেয়ে সন্তান হবে, তার জন্য মা কোনোভাবেই দায়ী নয়। ছেলেদের অসংখ্য শুক্রাণুর
ভেতর X ক্রোমোজোম বহনকারী না Y ক্রোমোজোম বহনকারী শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত
হবে, সেটি হচ্ছে প্রকৃতি কারণ। 

সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ
সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ


Conclusion:

শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এমন কুসংস্কার আছে যে, মেয়ে সন্তানের জন্য মহিলা দায়য়। মেয়েদেরই সবসময়ই দোষারফ করা হয়।
সচেতন সমাজের সকল নাগরিককের দায়িত্ব অন্যকে দোষারোপ না করে সঠিক তথ্যটা জানা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top