চিকিৎসার কারণে শরীরের ভেতরের কোনো অঙ্গ বা গহ্বরকে বাইরে থেকে সরাসরি দেখার প্রক্রিয়াটির নাম এন্ডোসকপি (Endoscopy)। এন্ডোসকপি যন্ত্র দিয়ে শরীরের ফাঁপা অঙ্গগুলোর ভেতরে পরীক্ষা করা যায় ।
এন্ডোসকপি (Endoscopy)
এন্ডোসকোপ যন্ত্রে দুটি স্বচ্ছ নল থাকে। একটি নল দিয়ে বাইরে থেকে রোগীর শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গের ভেতরে তীব্র আলো ফেলা হয়। এটি করা হয় অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে, আলো এই ফাইবারে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে প্রবেশ করে বলে নলটি সোজা থাকতে হয় না, আঁকাবাঁকা হতে পারে।
রোগীর শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত বা রোগাক্রান্ত জায়গাটি আলোকিত করার পর সেই এলাকার ছবিটি দ্বিতীয় স্বচ্ছ নলের ভেতর দিয়ে দেখা যায়। কোনো বস্তু দেখতে হলে সেটি সরল রেখায় থাকতে হয়।
কিন্তু শরীরের ভেতরের কোনো অঙ্গের ভেতর সরল রেখায় তাকানো সম্ভব নয়। তাই ছবিটি দেখার জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয় যেখানে আলো পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলন হয়ে আঁকাবাঁকা পথে যেতে পারে।
শরীরের অভ্যন্তরের একটি নির্দিষ্ট জায়গা সূক্ষ্মভাবে দেখার জন্য অত্যন্ত সরু ৫ থেকে ১০ হাজার অপটিক্যাল ফাইবারের একটি বান্ডিল ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকটি ফাইবার একটি বিন্দুর প্রতিচ্ছবি নিয়ে আসে বলে সব মিলিয়ে অত্যন্ত নিখুঁত একটি ছবি দেখা সম্ভব হয়।
অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু হয় বলে ৫ থেকে ১০ হাজার ফাইবারের বান্ডিলটির প্রস্থচ্ছেদও কয়েক মিলিমিটার থেকে বেশি হয় না।
বর্তমানে অত্যন্ত ক্ষুদ্র সিসিডি ক্যামেরার প্রযুক্তির কারণে এন্ডোসকপি যন্ত্রের নলের মাথায় একটি ক্ষুদ্র ক্যামেরা বসিয়ে সেটি সরাসরি শরীরের ভেতরে ঢুকিয়ে ভিডিও সিগন্যাল দেখা সম্ভবপর হচ্ছে।
এন্ডোসকপি ব্যবহার করে ডাক্তারেরা যেকোনো ধরনর অস্বস্তিবোধ, ক্ষত, প্রদাহ এবং অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি পরীক্ষা করে থাকেন। যে অঙ্গগুলো পরীক্ষা করার জন্য এন্ডোসকপি ব্যবহার করা হয় সেগুলো হচ্ছে-
- ফুসফুস এবং বুকের কেন্দ্রীয় বিভাজন অংশ
- পাকস্থলী, ক্ষুদ্রায়, বৃহদন্ত্র বা কোলন
- স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ
- উদর এবং পেলভিস
- মূত্রনালির অভ্যন্তর ভাগ
- নাসা গহ্বর, নাকের চারপাশের সাইনাস এবং কান
আরও পড়ুন… ইসিজি (Electrocardiography)
Conclusion:
এন্ডোসকপি (Endoscopy) করার সময় যেহেতু একটি নল সরাসরি ক্ষতস্থানে প্রবেশ করানো হয়, সেটি দিয়ে সেই ক্ষতস্থানের নমুনা নিয়ে আসা সম্ভব এবং প্রয়োজনে এটা ব্যবহার করে কিছু কিছু সার্জারিও করা সম্ভব।