আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান বা আল্ট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasonography) একটি মেডিকেল ইমেজিং টেস্ট যার দ্বারা শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অর্গান বা অঙ্গ পর্যবেক্ষণ করা হয় । বেশীরভাগ মানুষ মনে করেন শুধুমাত্র প্রেগন্যান্সিতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়।যা সঠিক নয়।বিভিন্ন রোগে এই টেস্ট করা হয়।মাঝে মধ্যে ক্রস চেক হিসেবেও এই টেস্ট করা হয়।
আলট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasonography)
![]() |
আলট্রাসনোগ্রাফি (Ultrasonography) |
আলট্রাসনোগ্রাফি দিয়ে শরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রতঙ্গ, মাংশপেশি ইত্যাদির ছবি তোলা হয়, এটি করার জন্য খুব উচ্চ কম্পাংকের শব্দ ব্যবহার করে তার প্রতিধ্বনীকে ব্যবহার করা হয়।
আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্রে ট্রান্সডিউসার নামে একটি স্ফটিকে বৈদ্যুতিক শক্তি দিয়ে উদ্দীপ্ত করে উচ্চ কম্পাঙ্কের আলট্রাসনিক তরঙ্গ উৎপন্ন করা হয়। আলট্রাসনিক যন্ত্রে এই তরঙ্গকে একটা সরু বিমে পরিণত করা হয়।
শরীরের ভেতরের যে অঙ্গটির প্রতিবিম্ব দেখার প্রয়োজন হয় ট্রান্সডিউসারটি শরীরে উপরে সেখানে স্পর্শ করে বীমটিকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়, রোগী সে যেন কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করে না।
আরও পড়ুন… এক্স-রে (X- Ray) বা রঞ্জন রশ্মি
যে অঙ্গের দিকে বিমটি নির্দেশ করা হয়, সেই অঙ্গের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রতিফলিত, শোষিত বা সংবাহিত হয়। যখন বিমটি মাংশপেশি বা রক্তের বিভিন্ন ঘনত্বের বিভেদতলে আপতিত হয়, তখন তরঙ্গের একটি অংশ প্রতিধ্বনিত হয়ে পুনরায় ট্রান্সডিউসারে ফিরে আসে।
এই প্রতিধ্বনিগুলোকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করে সমন্বিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবিম্ব তৈরি করে।
![]() |
সাধারণ 2-D, 3-D, 4-D এবং H-D আলট্রাসনোগ্রাফি ছবি |
আলট্রাসনোগ্রাফি নিচের কাজগুলো করার জন্য ব্যবহার করা হয়:
- আলট্রাসনোগ্রাফির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতিবিজ্ঞানে। এর সাহায্যে ভ্রূণের আকার গঠন, স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক অবস্থান জানা যায়, প্রসূতি বিজ্ঞানে এটি একটি দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
- আলট্রাসনোগ্রাফি দিয়ে জরায়ুর টিউমার এবং অন্যন্য পেলভিক উপস্থিতিও শনাক্ত করা যায়।
- পিত্তপাথর, হৃদ্যন্ত্রের ত্রুটি এবং টিউমার বের করার জন্যও আলট্রাসনোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। হৃৎপিণ্ড পরীক্ষা করার জন্য যখন আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করা হয়, তখন এই পরীক্ষাকে ইকোকার্ডিয়গ্রাফি বলে।
- এক্স-রের তুলনায় আলট্রাসনোগ্রাফি অনেক বেশি নিরাপদ, তবুও এটাকে ঢালাও ভাবে ব্যবহার না করে সীমতি সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয় ট্রান্সডিউসারটি যেন কোনো নির্দিষ্ট স্থানে বেশি সময়ের জন্য একটানা বিম না পাঠায় সেজন্য আলট্রাসাউন্ড করার সময় ট্রান্সডিউসারটিকে ক্রমাগত নড়াচড়া করাতে হয়।