কোন খাবার ই অতিরিক্ত খাওয়া উচিৎ নয়। আমরা জানি খাদ্য দেহের ক্ষয়রোধ ও দেহ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। দেহের প্রয়োজনের অধিক খাদ্য উপকার নয় বরং আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে।
![]() |
Photo: Max Pixel |
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ক্ষতিকর দিক ! যা কমিয়ে দিবে আপনার আয়ু ।
Harmful side of
eating extra meat! Which will shorten your life.
আল্লাহর রাসূল (সা🙂 বলেছেন– ‘তোমরা খাওয়ার সময় পাকস্থলীর একভাগ পূরণ করবে খাদ্য দিয়ে, আরেক ভাগ পানি দিয়ে এবং এক ভাগ খালি রাখবে শ্বাস–প্রশ্বাস গ্রহণের জন্য, তাহলে সুস্থ থাকবে।‘
এবং একজন জার্মান গবেষক নানা পরীক্ষা গবেষণার পর কথাটিকে সম্পূর্ণ বিজ্ঞান ও যুক্তিসংগত বলে মন্তব্য করেছেন।
বিশেষ করে অতিরিক্ত গোস্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য অনুযায়ী অনেকের তো গোস্ত খাওয়া একদমই উচিৎ নয়। হয়তো খুব অল্প পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে।
মাংসে উপস্থিত খাদ্য উপাদান : What are the nutrients in beef?
মাংসে |
|
নিউট্রিয়েন্ট |
মাংসে
Advertisements
|
ভিটামিন বি12 |
2.45 μg |
জিংক |
8.5 mg |
সেলেনিয়াম |
29 μg |
নিয়াসিন |
6.5 mg |
রিবোফ্লাভিন |
0.3 mg |
প্যানটোথেন্যাট |
1 mg |
আইরন |
3.5 mg |
ফসফরাস |
200 mg |
ভিটামিন বি5 |
0.25 mg |
কোলিন i |
70 mg |
থায়ামিন |
0.075 mg |
ম্যাগনেসিয়াম |
25 mg |
পটাসিয়াম |
300 mg |
ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ পদ্ধতি : How to store something safely in the fridge for a long time?
অতিরিক্ত মাংস খেলে কি ক্ষতি হয় ? What
is the harm of eating too much meat?
সাধারণত আমরা কোরবানি ঈদের সময় আমরা অতিরিক্ত গোস্ত খেয়ে থাকি। আর শুধু গোস্তই নয় ঈদের সময় আমরা অন্য সব খাবারও বেশি পরিমাণে খাই এবং গোস্তও। এই অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক চাপ বাড়ে। খাবার সহজে হজম হয়না। এতে পেটে গ্যাসের উৎপন্ন হয়।
কারো কারো পেট ফেঁপে উঠে। শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসছে। কেউবা বমি করে ফেলে। আবার কেউ ডাইরিয়া ও অজীর্ণ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ায় হতে পারে যেসব মারত্বক রোগ :
হার্টের রোগ : Heart Disease
১১ বছর ধরে প্রায় ৪৫০০০ মানুষের শারিরিক সক্ষমতা বিশ্লেষণ করে ২০১৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষক ফ্রানসিস্কো ক্রাউ প্রকাশ করেণ যে মাংস খাদকদের তুলনায় নিরামিষীদের হার্টের সমস্যা কম। হার্টের সমস্যায় ভোগা প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভোগে।
ক্যানসার : Cancer
২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার গবেষণার তথ্যমতে পৃথিবী জুড়ে অনেক মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয় লাল মাংস খাওয়ার কারণে। অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কারণে ২২ শতাংশ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে বলে গবেষণায় প্রকাশ করা হয়।
স্ট্রোক : Stroke
মাংস রক্তবাহী অংগে বাধা সৃষ্টি করে। তাই এটি আশ্চর্যের কিছু নয় যে মাংস স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে লাল মাংস গ্রহণের ফলে ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস : Diabetes
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ফলে সবচে বেশি যে রোগে আক্রান্ত হতে হয় তার নাম ডায়াবেটিস। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের একটি সমীক্ষা মতে মাংসের অনিয়ন্ত্রিত গ্রহণের ফলে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রচুর বৃদ্ধি পায়।
স্থুলতা : Obesity
ইউনিভারসিটি অব অ্যাডেল এর গবেষক শিক্ষার্থী আবিষ্কার করেন যে, মাংসও চিনির মত স্থুলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। গবেষণায় দেখা যায়, মাংসের প্রোটিন চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে পরে হজম হয়। প্রোটিন থেকে আসে শক্তি। মানবদেহ এই শক্তি ফ্যাট হিসাবে সংরক্ষণ করে। গবেষণায় দেখা যায় ১৩ শতাংশ রোগীর জন্য মাংস থেকে আসা ফ্যাট দায়ী।
কোলেস্টেরল : Cholesterol
ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল ধমনীর এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে । তবে এটি যেহেতু কেবলমাত্র মাংসভিত্তিক খাবারেই পাওয়া যায়, তাই ভেজিটেরিয়ান এর ডায়েটে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ ০ থাকে।
ব্রণ : Acne
উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবারের ফলে শরীরে তেল/চর্বি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় । আমরা জানি যে ত্বকে তখনই ব্রণ হয়, যখন ত্বককে তেলতেলে ভাব থাকে। মাংস বেশি খাওয়ার কারণে শরীরে বেশি পরিমাণ তেল জমা হয়। ফলে ত্বকও বেশি তেলতেলে হয়ে যায়। যার কারণে ব্রণ বৃদ্ধি পায়।
পঙ্গুত্ব : Paralysis
গবেষনায় দেখা গেছে মাংস খাওয়ার ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। এই অবস্থা হৃদপিন্ড এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ হ্রাস করে এবং হার্ট এ্যাটাক এবং স্ট্রোকের দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ হার্ট এ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণে মানুষ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব গ্রহন করে।
আলঝেইমার রোগ : Alzheimer’s Disease
গবেষকরা মনে করেন অতিরিক্ত মাংস গ্রহণ আলঝেইমার রোগেরও কারণ হতে পারে।গবেষকরা দেখতে পান মাংসের প্রোটিন আলঝেইমার রোগের বিকাশকে সহায়তা করে।
সংক্ষিপ্ত জীবনকাল : Shorter Lifespan
মেয়ো ক্লিনিকের গবেষণা অনুযায়ী মাংস গ্রহণকারীদের চেয়ে নিরামিষাশীরা দীর্ঘদিন বাঁচে। যারা নিরামিশী তারা মাংস গ্রহণকালীদের তুলনায় ২.৬ বছর বেশি বাচেন গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে। তাই, গবেষকরা চিকিৎসকদের বলেন রোগীদের মাংসের তুলনায় শাকশবজি বেশি গ্রহণ করতে।
Conclusion:
অনেকে এতই অসুস্থ হয়ে পড়ে যে, হাসপাতালে নিতে হয়।তবে কিছু নিয়ম মেনে গোস্ত খেলে আমরা বিভিন্ন সমস্যা এড়িয়ে চলতে পারবো। গরুর গোস্তে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম রয়েছে তাই অতিরিক্ত গরুর গোস্ত শরীরের জন্য ক্ষতিকর বলে জানান পুষ্টিবিদরা।
কারণ এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়। আর উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত গোস্ত খাওয়া ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।